গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাধখলা ( পূর্ব পাড়া) গ্রামে মোবাইল চুরির অভিযোগে দুই শিশুকে নিজ বাড়ী থেকে ধরে নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।

শুক্রবার (১৬ই এপ্রিল ) দুপুর ১২টার দিকে তাওহিদ (১০) ও আশিক (১৩) নামে ওই দুই শিশুকে নিজ বসতভিটা থেকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে যায় বিবাদী ফজলুল হক (৬০) এর নেতৃত্বে আলমগীর (২৮), জাহাঙ্গীর (২৫), সাদিকুল (১৮) ও মোছাঃ হেনা (৪০) মিলে মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে দুই শিশুকে বিবাদীদের বসত ঘরে আটকিয়ে রেখে মারধর করে।

পরে দুপুর ২ টার দিকে শিশু আশিক কৌশলে বিবাদীদের বাড়ী থেকে পালিয়ে এসে মাকে ঘটনাটি জানালে এলাকার লোকজন নিয়ে ছোট ছেলে তাওহিদকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,মোবাইল চুরির অপবাদ দেওয়া শিশু দুইভাই শিরিরচালা ড.এম.এ ওয়াজেদ মিয়া অটিজম প্রতিবন্ধি স্কুলের ছাত্র, তওহিদ দ্বিতীয় শ্রেনীর ছাত্র এবং আশিক তৃতীয় শ্রেনীর ছাত্র।

তাওহিদ ও আশিক দুই শিশুর মা লিমা জানান,আমি একজন অসহায় গরীব মানুষ অন্যের বাড়ীতে কাজ করে সংসার চালায়,স্বামী বোকা পাগল,ছেলে দুটিকে প্রতিবন্ধি স্কুলে লেখাপড়া করাই। বিবাদীদের গরুর দুধের ৪০ টাকা দাম দিতে আমার ছোট ছেলে তাওহিদকে পাঠায়,সে দুধের দাম দিয়ে চলে আসে। দুই ঘন্টা পড়ে বিবাদী ফজলুল হকের হুকুমে সাদিকুল ও হেনা আমার বসতবাড়ী থেকে জোরপূর্বক টানা হেচরা করে প্রতিবন্ধি দুই শিশুকে তাদের বাড়ীতে ধরে নিয়ে যায়। আলমগীর ও জাহাঙ্গীর মিলে আমার ছেলেদের গলায় চাপিয়া ধরিয়া শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে উল্লেখিত সকল বিবাদীগণ আমার দুই শিশুদের এলোপাতাড়ি কিল,ঘুষি, লাথি মারিয়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলফুরা জখম করে বিবাদীদের বসতঘরের ভিতর আটকিয়ে রাখে। আমার বড় ছেলে আশিক কৌশলে বিবাদীদের বাড়ী থেকে পালিয়ে এসে আমাকে অবহিত করে। আমি স্থানীয় লোকজনদের সহায়তায় উক্ত বিবাদীদের বাড়ী থেকে ছোট ছেলেকে উদ্ধার করে থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করি।

ড.এম.এ ওয়াজেদ মিয়া অটিজম প্রতিবন্ধি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সুমি করিম বলেন, আমাদের স্কুলের দুইজন ছাত্রকে মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে ধরে নিয়ে মারধরের ঘটনাটি শুনেছি অত্যন্ত দুঃখজনক। এবিষয়ে ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের সাথে আলোচনা চলছে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঘটনার ব্যাপারে জানতে চাইলে বিবাদী ফজলুল হক গং বলেন, মোবাইল চুরির অপরাধে শিশুদের বেঁধে রাখা হয়েছিল। তবে নির্যাতন করা হয়নি। কয়েকটি চড়-থাপ্পড় দেয়া হয়েছে মাত্র। পরে বিকেল ২টার পর অভিভাবকরা আসলে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

শ্রীপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমাম হোসাইন বলেন, এবিষয়ে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।